ফ্ল্যাশ মিডিয়ার নিউজ ডেস্ক, ১০ জুলাই,শিলিগুড়ি: বন্ধুর মৃতদেহের পাশেই তিন রাত কাটালো বন্ধু। তিন দিন ধরে বন্ধুর মৃতদেহ আগলে থাকার পর অবশেষে এলাকাবাসীদের হাতে ধরা পড়ে গেল রাহুল। কিন্তু কেন, বন্ধুর মৃত্যুর পরেও বন্ধুকে আগলে রাখলো রাহুল? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে শিলিগুড়ি বাসির মনে।
এটা কি বন্ধুত্ব! নাকি অন্য কিছু? বন্ধুর মৃত্যুর পর, বন্ধুর পরিবারকে বা পুলিশ প্রশাসনকে খবর না দিয়ে, বন্ধুর মৃতদেহ পাশে নিয়েই রাত কাটালো অপর বন্ধু, কিন্তু কেন? বন্ধুকে মারাত্মক ভালোবাসাই কি এর কারণ? নাকি এই মৃত্যুর পেছনে রয়েছে রহস্য? গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত শিলিগুড়ি শহরের বাগডোগরা বাসিন্দারা, এটাও কি সম্ভব? বন্ধুর মৃতদেহ কে সাথে নিয়ে ৭২ ঘন্টা কাটিয়ে দিল রাহুল কিন্তু কেন? গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বাগডোগরা থানা।
রাহুল ও রামকিশোর খুব ভালো বন্ধু কর্মসূত্রে রাহুলের বাড়িতেই থাকতো রামকিশোর। কিন্তু তিন দিন আগে মৃত্যু হয় রামকিশোর এর। বিগত
তিনদিন ধরে ঘরেই পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। আর সেই মৃত দেহকে আগলে দিন কাটাচ্ছিল রাহুল।
স্থানীয়রা শুক্রবার রাত থেকেই এলাকাতে পচা গন্ধ পেতে শুরু করেন। শনিবার সকালে এলাকায় শুরু হয় গুঞ্জন।
দূর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা রাহুলের বাড়িতে এসে দেখেন রামকিশোর এর মৃতদেহ রয়েছে ঘরের ভেতরে। গোটা ঘটনায় হকচকিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বাগডোগরা থানার অন্তর্গত ভুজিয়াপানি এলাকায় রাহুল ঝার ঘরে তার বন্ধুর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাগডোগরা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম রামকিশোর গুরুং। তিনি হাসিমারার বাসিন্দা। রাহুল ও রামকিশোর একে অপরের বন্ধু হিসেবেই এক ঘরেই থাকত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন
তিনদিন আগে রামকিশোর এর
মৃত্যু হলেও তার পরিবারকে বা
প্রশাসনকে কোনো খবর দেয়নি রাহুল ঝা, কিন্তু কেন?
তা নিয়েই ধন্দে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ এলাকাবাসীদের কাছ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার এর ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বাগডোগরা থানার পুলিশ ছুটে এসে রাহুল ঝাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পাশাপাশি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে রামকিশোরের। তবে রাহুলের বাক হীনতা পুলিশকে অন্য গল্পেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা ছুটে যান বাগডোগরায়।
রাহুলকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এর উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা। ঠিক কী ঘটেছিল?এবং কেন মৃতদেহ আগলে রেখে ৭২ ঘন্টা কাটিয়ে দিল রাহুল? এখন সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ এবং শিলিগুড়ির বাগডোগরা বাসিন্দারা।