করোনা রোগীকে হাত-পা বেঁধে রেখে দেওয়ার অভিযোগ শিলিগুড়িতে

শিলিগুড়ি,৯জুন,জয়া রায়: করোনা রোগীকে হাত-পা বেঁধে রেখে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিং হোম এর বিরুদ্ধে,তবে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের।করোনা রোগীকে হাত-পা বেঁধে অত্যাচারের অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোড স্থিত একটি বেসরকারি নার্সিং হোম এর বিরুদ্ধে।

অভিযোগ, গত ২৪শে মে দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭০ বছর বয়সী ঐ মহিলাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। তবে ভর্তি করার পর থেকেই তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে ৪০হাজার টাকা করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, যে করোনা আক্রান্ত ওই মহিলার সাথে তার ছেলে এবং পরিবারের কাউকে ফোন মারফতও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। রোগীর আত্মীয় স্বজনদের অভিযোগ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে যোগাযোগ করার পরে করোণা আক্রান্ত ওই মহিলাকে তার ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় এবং ওই মহিলা তার ছেলেকে অভিযোগ করে বলেন যে ওখানে তার ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এরপর তার ছেলে রাজু সরকার হাসপাতালে তার মায়ের সাথে দেখা করতে যান এবং গিয়ে দেখেন যে তার মায়ের হাত পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর শিলিগুড়ি থানায় ঐ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন রাজু বাবু।

করোনা মহামারীতে যাতে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী কোন রকম ভাবেই বিনাচিকিৎসায় এবং রোগীর পরিবারকে যাতে হয়রানির শিকার না হতে হয় সে কারণেই কিন্তু দফায় দফায় বৈঠক করছেন শিলিগুড়ি পুর প্রশাসক, শিলিগুড়ি বিধায়ক সহ স্বাস্থ্য প্রশাসন। যাতে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারকে হয়রানি শিকার না হতে হয় সে কারণেই।পাশাপাশি কতসংখ্যক বেড খালি রয়েছে এবং কয়টি বেড রয়েছে সেই সমস্ত বিষয়ে একটি নোটিশ নার্সিংহোমের বাইরে লাগানোর কথা বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এর পরেও চিকিৎসার নামে চলছে কালোবাজারি। তবে এবার চিকিৎসা গাফিলতি বা চিকিৎসা নিয়ে কালোবাজারি নয়, এবার অভিযোগ উঠল করোনা রোগীর হাত-পা বেঁধে রাখার।

করোনা আক্রান্ত ওই মহিলার ছেলে রাজু সরকারের অভিযোগ, গত ২৪ মে তার মা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাকে মাটিগাড়া বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার কথা ছিল সেখানে নিয়ে গেল বেড না থাকার কারণে তাকে ওখান থেকে নিয়ে হিলকার্ট রোডের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। এরপর রাজু বাবুকে নার্সিংহোমের তরফে জানানো হয়েছে যে “আপনার মা এখন ভালো রয়েছে দুই এক দিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে” তবে কোন রকম ভাবেই তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না নার্সিংহোমে তরফে এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়াও তার অভিযোগ রয়েছে, গত রবিবার তিনি নিজে করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিন্তু তা সত্বেও তিনি নার্সিংহোমে মাকে দেখতে গেলে সেখানে দেখেন তার মায়ের হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরপর শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় পাশাপাশি শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক গৌতম দেবের কাছে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে নার্সিংহোমের ডিরেক্টর ডঃ মৈনাক মুখার্জি জানান, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তিনি বলেন, ওই মহিলাকে কোন রকম ভাবেই শারীরিক অত্যাচার করা হয়নি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছি এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিক কে সিসিটিভি ফুটেজ দিয়েও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তিনি রাজু বাবু বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন যে, তিনি কর্তব্যরত নার্সিংহোম কর্মীকে হেনস্থা করে জবরদস্তি কোভিড ওয়ার্ডের ঢুকেছেন। এই বিষয়েও শিলিগুড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে রাজু বাবুর বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে শিলিগুড়ি পুলিশ।