জনার্দন রায়, ১৫সেপ্টেম্বর, শিলিগুড়ি: জলপাইগুড়ি জেলার পর এবার শিলিগুড়িতে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে একের পর এক শিশু। বিগত তিন দিনে জলপাইগুড়িতে জ্বর সহ বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শতাধিক শিশু। এবার আক্রান্তের খবর মিলছে শহর শিলিগুড়ি থেকেও।
অজানা জ্বরের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। জ্বরের কবলে জলপাইগুড়িতে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে শুধু জলপাইগুড়িতেই শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২। এখনও জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভরতি ২০০র কাছাকাছি শিশু।প্রায় একইরকম উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শিলিগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে ভরতি অন্তত ৭০ জন শিশু। তাদের প্রত্যেকেরই জ্বর। তবে তার কারণ অজানা।
ফলে সবমিলিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে উত্তরবঙ্গে।সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে জলপাইগুড়ি জেলায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশুর বয়স মাত্র ৭ মাস। সে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা। কয়েকদিন ধরেই জ্বর না কমায় মঙ্গলবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেন অভিভাবকরা।
তবে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়ে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর আগে সোমবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৬ বছরের কাবেরীকে। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা সে। প্রবল জ্বর ছিল তার। তাকে ভরতির পরই চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।
মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় ওই শিশুর। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়।জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি হাসপাতালে সবমিলিয়ে অন্তত ২০০ জন শিশু অজানা জ্বর নিয়ে ভরতি রয়েছে । জ্বরের কারণ জানতে শিশুদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। এছাড়া পুণের ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতেও পাঠানো হয়েছে সোয়াব ও মলের নমুনা।
তবে পরীক্ষার ফল এখনও হাতে আসেনি। সোয়াব এবং মলের নমুনার রিপোর্ট হাতে পেলে তবেই জ্বরের কারণ কিংবা কোথা থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা স্পষ্ট হতে পারে বলেই মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।অন্যদিকে, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহারের শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে এই জ্বরের প্রকোপ। শিলিগুড়ি মহকুমা হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জ্বর সহ বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে ভরতি আরও অনেক শিশু।
তবে কী কারণে এই জ্বর, তা বুঝতে পারছেন না চিকিৎসকরা। শিশুদের জ্বর কমানো-সহ একাধিক অসুস্থতারও চিকিৎসা চলছে। তাদেরও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি কলকাতাতেও ধীরে ধীরে এই সংক্রমণ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ জন শিশু ভরতি রয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাদের আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে বলে খবর। সব মিলিয়ে পুজোর আগে শিশুদের এই জ্বর আক্রান্ত হওয়া এবং নানান উপসর্গ দেখা দেওয়ায় চিন্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।