শিলিগুড়ি,১৪মে,সুস্মিতা সাহা বিশ্বাস: কিছুতেই যেনো দমছেনা করোনার দাপাদাপি।দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। পরিস্থিতি ভালো নয় পশ্চিমবঙ্গেরও।দেশে মৃতের সংখ্যা ক্রমশই এগিয়ে চলেছে 3 লক্ষের দিকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। অপর দিকে ভারতে করোনার সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পেছনে রাজনৈতিক সভা এবং ধর্মীয় জমায়েত এর বড় ভূমিকা রয়েছে বলেই দাবি করছেন who এর বিশেষজ্ঞরা। দূরত্ব বিধি না মানার কারণেই ঝড়ের গতিতে ছড়িয়েছে সংক্রমণ এমনটাই মত who এর বিশেষজ্ঞদের। ফলে ক্রমশই লাগামছাড়া হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ। যার জেরে বেসামাল গোটা দেশ।
বৃহস্পতিবার এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১২৯ জন রাজ্যবাসী কে হারিয়েছি আমরা। যদিও সংখ্যাটা বিগত দিনের থেকে কিছুটা কম।তবে বিগত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তর 24 পরগনা এবং কলকাতায় সংক্রমণের হার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। এরইমধ্যে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েও সমস্যা অব্যাহত। দিকে দিকে ভ্যাক্সিনেশন নিয়েও হাহাকার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ মারন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।বিগত ৭ দিনে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বাংলায়। রাজ্যে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৮৩৯। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপেই বেসামাল দেশ তথা রাজ্য। গবেষকরা বলছেন করোনার নতুন স্ট্রেন আরো বেশি সংক্রমক। এই মহামারীর হাত থেকে বাঁচতে চাইছে সকলে। অপরদিকে রাজ্যের এই ভয়াবহ করোণা পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার।
বিগত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৮৩৯ জন। করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১২৯ জনের। বিগত ৭ দিনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাটা কিছুতেই একশোর নিচে নামছে না। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দপ্তর। করোনার প্রথম ঢেউ থেকে এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৯৫ জন। করোনাকে জয় করে বিগত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ হাজার ১৮১ জন। উত্তর ২৪পরগনা এবং কলকাতায় বিগত ২৪ ঘন্টায় মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২৫ এবং ৩৯।
উত্তরবঙ্গের মধ্যে আক্রান্ত এবং মৃতের তালিকায় প্রথমের দিকে রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি,মালদা ও উত্তর দিনাজপুর জেলা। জলপাইগুড়ি জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৪ জন।জলপাইগুড়ি জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করণা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭৫। দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। আলিপুরদুয়ার জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করণা আক্রান্ত হয়েছেন ১০০ জন। কোচবিহার জেলায় আক্রান্ত ৩০০ জন। কালিংপং জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। উত্তর দিনাজপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত ২৮৯ জন। উত্তরদিনাজপুর জেলাতেও মৃত্যু হয়েছে ৫জনের।দক্ষিণ দিনাজপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৪ জন।দক্ষিণ দিনাজপুরে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। মালদায় আক্রান্ত ৪৪৬ জন।
সবমিলিয়ে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যাটা প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় জেলায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যে চলছে আংশিক লকডাউন। তবুও যেনো লাগামে আসছে না আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে প্রাণে বাঁচতে পুনরায় রাজ্যে ফুল লকডাউন করার দাবি তুলছেন আমজনতা। অপর দিকে মহামারী থেকে বাঁচতে রাজ্যবাসীকে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মহামারীর প্রকোপ থেকে বাঁচতে আংশিক লকডাউন মেনে চলতে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী পাশাপাশি এই লকডাউন সফল করতে অভিযানে নামতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকেও।
আপনাদের কাছে অনুরোধ এই মহামারী থেকে বাঁচতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোবেন না। সবসময় মাক্স ব্যবহার করুন স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলুন। আর অবশ্যই টিকা নিতে ভুলবেন না।