শিলিগুড়ি,৪জুন,ডেস্ক রিপোর্ট ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ: প্রায় ১৫ দিন বাদে রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেল। বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১০৮ জনের মৃত্যু হল পশ্চিমবঙ্গে। অপরদিকে উত্তরবঙ্গে মিউকরমাইকোসিসের বলি আরো এক। বিগত ৪৮ ঘণ্টায় মিউকরমাইকোসিসের মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গের মোট তিনজনের। এদিকে বিগত ২৪ ঘন্টায় গোটা রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮১১জন। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের রিপোর্ট দেখে একটা বিষয় পরিষ্কার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে জেলায় জেলায়। পাশাপাশি কমেছে মৃত্যুর সংখ্যাও।
তবে অন্যান্য দিনের মতো রাজ্যে সর্বাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায়। তবে সংখ্যাটা কমেছে অনেকটাই। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার,মালদা জেলাতে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি গত ২৪ ঘন্টায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় বিগত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১৩০ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। কিছুদিন আগেও শিলিগুড়ি শহরেই দৈনিক তিন শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হতেন। শিলিগুড়ি শহরের পাশাপাশি প্রতিটি জেলাতেই কমছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কমছে জেলায় জেলায় মৃত্যুর সংখ্যাও। অপরদিকে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনাতে মৃত্যুর সংখ্যাতে রাশ এসেছে।
সরকারের নেওয়ার কার্যত লকডাউন এর সিদ্ধান্ত যে সফল হয়েছে তা এই করোণা আক্রান্তের সংখ্যাার হ্রাসেই টা পরিষ্কার। প্রতিদিনই সুস্থতার হার বাড়ছে সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতাল নার্সিংহোম গুলিতে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আপরান প্রয়াসের ফল এই সুস্থতা। করোনার থাবা থেকে একেবারে মুক্ত না হতে পারলেও
বিগত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিমবঙ্গে সুস্থতার হার বেশ ভালো, গত ২৪ ঘন্টায় হাজার জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন। বেশ কিছু জেলাতে গত ২৪ ঘন্টায় কোন মৃত্যুর খবর নেই।
চিকিৎসকেরা করোনা রোগীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, করোণা মানেই মৃত্যু নয়, তা আশঙ্কাজনক এবং প্রবীণ করোনা রোগীদের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে বুঝিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে মিউকরমাইকোসিস বর্তমানে কিছুটা হলেও চিন্তা বাড়িয়েছে চিকিৎসক মহলের। তবে এই রোগ ছোঁয়াচে নয় এটাই স্বস্তির।
আগামী ১৫ ই জুন পর্যন্ত রাজ্যে নানান বিধিনিষেধ জারি রেখেছে রাজ্য সরকার। তবে দোকানপাট খোলার সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি, হোটেল-রেস্তোরাঁ কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে করোণা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে কমছে তাতে একটা বিষয় বলা যেতেই পারে, আগামী ১১দিনে অনেকটাই সংক্রমণের রাশ ঘটবে বাংলায়।
এবার জেনে নেওয়া যাক গত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় কতজন সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৯৭ জন। তবে জলপাইগুড়ি জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭৬১ জন।মৃত ৩ । আলিপুরদুয়ার জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ২২০ জন। কোচবিহার জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৩৭৭ জন। কালিংপং জেলায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০৭জন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।উত্তর দিনাজপুর জেলায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৩৬ জন। উত্তর দিনাজপুরে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। দক্ষিণ দিনাজপুরে করোণায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০৯ জন। মৃত ১ জন।মালদায় ২১১ জন গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।হাজারো এই সুস্থতার মাঝে আমরা অবশ্য হারালাম বিগত ২৪ ঘন্টায় ১০৮ জন রাজ্যবাসীকে। রাজ্যে বিগত ২৪ ঘন্টায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮১১ জন। আর বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা ১৬ হাজার ৯৩৮ জন বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন। মাটিগাড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ জন। ফাঁসিদেওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭ জন । খড়িবাড়িতে বিগত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ জন। নকশালবাড়িতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩২ জন।
করোনার হাত থেকে রেহাই পেলেও শিলিগুড়ি এবং গজলডোবার দুই মহিলা ও শিলিগুড়ির দেবী ডাঙ্গার এক ব্যক্তির মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যু,অনেকটাই চিন্তা বাড়িয়েছে চিকিৎসক মহল এবং উত্তর বঙ্গবাসী কে। এখন এটাই দেখার চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা কিভাবে করোনার পর মিউকরমাইকোসিস থেকে আম জনতাকে রক্ষা করে।
ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ এর তরফ থেকে আপনাদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ কোন রকম শারীরিক সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনরকম উপসর্গ দেখা দিলেই,পরীক্ষা করিয়ে নিন করোনার। অবহেলা একদম নয়। সম্ভব হলে দিয়ে নিতে হবে টিকা, বাড়ির বাইরে বেরোলে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে মাস্ক।আর শারীরিক দূরত্ব এবং স্যানিটাইজার বাঁচাবে সংক্রমণের হাত থেকে।