শিলিগুড়ি,৮জুন,জহিরুল হক: আজও পৃথিবীতে কিছু মানুষের মধ্যে মানিবিকতা বেঁচে আছে বলেই পৃথিবীতে সমস্ত প্রাণীই সুস্থ আছে। এরকমই এক ছবি ধরা পড়লো ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ এর ক্যামেরায়।শিলিগুড়ি শহরের আলো চৌধুরী মোড়ে এই ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষই যাদেরকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয় সেই পথ কুকুর দেরই ভালোবেসে আদরকরে মুখে খাবার দিচ্ছেন এক স্কুল ছাত্রী।
শিলিগুড়ির ওই স্কুলছাত্রীর নাম সুভাংকি সরকার এবং তাকে সহায়তা করছেন মা সুস্মিতা সরকার । লকডাউন এর শুরু থেকে কার্যত লকডাউন চলাকালীন হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় পথক কুকুরদের খাবার নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। খাবারের অভাবে এদিকে ওদিকে ঘুরতে দেখা যায় ওদের। অবশেষে খাবার না পেয়ে আবার পথের ধারেই ঘুমিয়ে পড়ে ওরা। এ দৃশ্যই চোখে পড়তে চোখে জল চলে আসে শিলিগুড়ি স্কুল ছাত্রী
সুভাংকি সরকারের। মাটিগাড়া সেন্ট জোসেফ স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বিষয়টি জানায় তার বাবা এবং মা কে। মিলে যায় বাড়ি থেকে তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য অনুমতি। শুধু তাই নয় সুভাংকি কে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেয় তার মা। ব্যস শুরু কর্মকাণ্ড।দীর্ঘদিন ধরে তারা এই ভাবেই প্রত্যেকদিন পথ কুকুরদের মুখে রান্না করা খাবার ভাত ডাল তুলে দেন। এই অবলা পশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরে একটা অন্যরকম অনুভূতি পেয়েছেন দুজনেই।এখন শহরের বেশকিছু পথ কুকুর রাও সেই খাবারের আসায় প্রত্যেকদিন সেখানে জড়ো হয়। এমনকি শুভাংকিকেও নিজের হাতে কুকুরদেরকে খাইয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে। সুভাংকির বাবা পেশায় একজন পুলিশকর্মী।
সরকার পরিবারের এই মানবিক কাজে খুশি এলাকাবাসীরাও।এভাবে পশুদেরকে খাওয়াতে পেরে নিজেও খুশি শুভাংকি এবং তার পরিবার।
লোকডাউনের মাঝে যেহেতু দিনের বেশিরভাগ সময়টাই খাবারের দোকান পাট বন্ধ থাকছে ফলে পথে ঘাটে থাকা এই অবলা প্রাণীরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছেন না। বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় ফেলে দেওয়া খাবারই ওদের প্রাণ বাঁচায়। সরকারি বিধি নিষেধের কারণে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরা।
আর সেই কারণেই যতদিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে এই কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাবে সরকার পরিবার বলে জানিয়েছেন তারা। শুধুমাত্র এদের কথা ভেবেই তারা প্রত্যেকদিন তাদের জন্য খাবারের ব্যাবস্থা করেন এবং সময়মতো তাদের মুখে এই খাবার তুলে দেন।প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এই অবলা প্রাণীগুলির জন্য বেঁচে থাকুক মানিবিকতা,বেঁচে থাকুক ভালোবাসা।