শিলিগুড়ি,২৭এপ্রিল,প্রসেনজিৎ রাহা: দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়েছে। প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। অক্সিজেনের ঘাটতিও বাড়ছে দেশে। ভ্যাকসিনেরও অভাব রয়েছে। এরকম এক পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের গতি রুখতে ফের দেশজুড়ে কি লকডাউন প্রয়োজন? কী বলেছেন বিশেষজ্ঞরা?
এনিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। কেউ কেউ মনে করছেন, আগের বছরের মতো ফের দেশজুড়ে লকডাউন না করে উপায় নেই। তবে সরকার আপাতাত তা চাইছে না। কারণ তাতে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়বে। অন্যদিকে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞের মত একমাত্র যেসব জায়গায় খুব বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেখানেই লকডাউনের প্রয়োজন।
বেঙ্গলুরুর লাইফকোর্স এপিডেমিওলজির প্রধান অধ্যাপক গিরিধর বাবু এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছেন, দেশজুড়ে লকডাউন করে কিছু হবে না। আমাদের খুঁজে বের করত হবে সংক্রমণের এপিসেন্টারগুলো কোথায়।তবে শহর এলাকায় লকডাউন প্রয়োজন। সংক্রমিত রোগী খুঁজে বের করা না গেলে লকডাউন করে কোনও লাভ হবে না। লকডাউনে সংক্রমণের গতি কমতে পারে। কনটেনমেন্ট জোন করলেই সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।
কর্ণাটক সরকারের কোভিড টাস্কফোর্সের সদস্য, ড বিশাল রাও বলেছেন, নিখুঁত পরিকল্পনা না করে লকডাউন না করলে সমস্যা তৈরি হবে। ভ্যাকসিন বিতরণের মতো কাজ ব্যাহত হতে পারে।
দিল্লির ওয়েলকাম ট্রাস্ট ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের ভাইরোলজিস্ট ড: শাহিদ জামিলের দাবি, দেশজুড়ে লকডাউন করে কোনও লাভ হবে না। যে সব জায়গায় সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে সেখানেই লকডাউন করতে হবে। আগের বছর লকডাউন করে কী অবস্থা হয়েছিল তা সবাই দেখেছি। ফলে ব্যালান্স রেখেই সব কাজ করতে হবে।বিষেষজ্ঞরা এসব মত এমন একটা সময়ে দিচ্ছেন যখন দেশে দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে তিন লাখ পার করে গিয়েছে।
সোমবার দেশ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩,৫২,৯৯১ জন। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৭৩,১৩,১৬৩। মৃত্যু হয়েছে ১,৯৫,১২৩ জনের। তবে এদেশের অধিকাংশ মানুষ এখন চাইছেন যে সমস্ত এলাকায় করোনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সেখানে করা হোক লকডাউন। কারণ এখনও অনেকেই রাস্তাঘাটে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। মানছেন না শারীরিক দূরত্বও বিধিও। কোটাক দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে করোনা রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজ্য সরকার নাইট কারফিউ এর পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক কনটেইনমেন্ট জোন করে লকডাউন শুরু করেছে। দেশের বেশ কিছু ব্যবসায়িক সংগঠন অল্প সময়ের জন্য দোকানপাট খুলছেন আবার অনেকে তাড়াতাড়ি দোকানপাট বন্ধ করছেন। তার পাশাপাশি দোকানী থেকে শুরু করে ক্রেতা প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহারের ওপর কড়া নির্দেশ দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক করোণা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। নবান্ন রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে প্রতিটি এলাকায় নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে। মাস্ক ছাড়া পথে নামলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জনসমাগমে রাশ টানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি গোটা দেশে যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে সংক্রমিত এলাকাতে ফুল লকডাউন না করলে আখের যে কোনো লাভ হবে না তা বুঝতে শুরু করেছে দেশের আমজনতাও।