শিলিগুড়ি,১লা জুন, সুস্মিতা সাহা বিশ্বাস:
কেন আজ সরে আছো দূরে, কাছে এসে হাত দুটো ধরো! এই লাইনগুলো এখন আর বাস্তবায়িত হচ্ছে না, কারণ কাছে আসা তো দুরস্ত বাড়ি থেকে বেরোনোটাই বর্তমানে বন্ধ লকডাউনের জেরে।তাই দুজনে পাশাপাশি বসে হাতে হাত রেখে সারাদিন একে ওপরের দিকে চেয়ে থাকা আজকাল স্বপ্ন প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে।
রাজ্যে চলছে রাজ্য সরকারের দেওয়া কড়া বিধি নিষেধ।ফলে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে পারছে না কেউই।কিন্তু প্রেমিক যুগলের মনের প্রয়োজনীয়তার কথা তো আর বিধি নিষেধে লেখা নেই, তাই অগত্যা বাড়িতে বসে ফোন কল বা এস এম এস অথবা ভিডিও কলেই সারতে হচ্ছে মনের কথা। আর লকডাউনে বন্ধ পার্ক রেস্টুরেন্ট মাল্টিপ্লেক্সের প্রেম,আর সেই কারণেই ফাঁকা পড়ে আছে পার্ক এর বেঞ্চ গুলো।
শিলিগুড়ি সূর্যসেন পার্ক, ডাবগ্রাম মাঠ, বাঘাযতীন মাঠে যেখানে বিকেল থেকেই দেখা যেত প্রেমিক প্রেমিকাদের আনাগোনা, সেই আনাগোনা বর্তমান কার্যত লকডাউন পরিস্থিতির জন্য নিষিদ্ধ। প্রতিটি পার্কেই বিকেল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত প্রতিদিনই জোড়ায় জোড়ায় দেখা যেত ওদের। টানা এতোটা সময় ধরে পার্কের বেঞ্চে বসে প্রেমিকাকে পাশে বসিয়ে আকাশ কুসুম চিন্তা ভাবনায় ডুবে থাকা আজ আর সম্ভব নয়।
তাই আবার সেই দিনটা ফিরে আসার চিন্তায় বর্তমানে দিন শুনছেন প্রেমিক যুগল। আবার কবে হাতে হাত রেখে মুখোমুখি বসে এতো দিনের জমানো কথা একে ওপরকে বলবো আর, “কবে থেকে তোমায় দেখি না” এই দুঃখ ভুলতে প্রাণ ভরে একে অপরকে দেখবো সেই চিন্তাতেই দিন গুনছেন প্রেমিক প্রেমীকেরা। কার্যত লকডাউনে এখন ডিজিটাল প্রেমেই সময় কাটছে ওদের।বন্ধ মাল্টিপ্লেক্স, বন্ধ রেস্টুডেন্ট, বার,সিঙ্গিং বার, আমোদপ্রমোদ যেনো করোনার এক দাপটে কর্পূরের মত উবে গেছে।তাই পাশে বসা একটু কিছুক্ষণ পাশে থাকা এখন অতীত।
কবে শান্ত হবে পৃথিবী। কবে অবাধ হবে চলাচল। আসতে পারবে একে অপরের কাছাকাছি, এখন সেই আশা তেই প্রহর গুনছে ওরা। ঠিক একই হাল জলপাইগুড়ি কোচবিহার জেলার প্রেমিক-প্রেমিকাদেরও। কোচবিহার রাজবাড়ি থেকে সাগরদিঘী।জলপাইগুড়ির জুবলি পার্ক থেকে রাজবাড়ী পুকুর কোথাও কেউ নেই। ময়নাগুড়ি খুকশিয়া ও ফালাকাটার কুঞ্জনগরে এখন নিস্তব্ধতা। রসিকবিল থেকে তিস্তার চর কোথাও দেখা যাচ্ছে না প্রিয় বা প্রীয়াদের। এই করোনা মহামারী প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে দুই গুজ এর দূরত্বই শুধু নয় মুখ দেখাদেখিটাও বন্ধ করে দিয়েছে।