শিলিগুড়ি,১৬মে,সুস্মিতা সাহা বিশ্বাস: দেশে যখন করোনা সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দীর্ঘ হয়েছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা।এই সময় সংক্রমণকে বাগে আনতে রাজ্যে শুরু হলো কড়া লকডাউন। গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলায় এখনো দাপট দেখিয়ে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। করোনা ভাইরাসের ভ্রূকুটিতে কাঁপছে গোটা বাংলা।কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া বর্তমান পরিসংখ্যান বলছে দেশে দৈনিক প্রায় 4 হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে মারন করোনাভাইরাস। করোনার এই নতুন স্ট্রেন যে কতটা ভয়াবহ হবে তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন গবেষকেরা। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের শনিবারের পরিসংখ্যান বলছে ২৪ ঘন্টায় বাংলায় করোণা আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫১১।গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণ সামান্য কমলেও রেকর্ড হারে বাড়ছে মৃত্যু।বাংলায় দেড়শোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা।২৪ ঘন্টায় বাংলায় মৃত্যু হয়েছে ১৪৪ জনের।গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যের এই রেকর্ড মৃত্যু উদ্বেগ আরো বাড়াচ্ছে সরকারের ।তবে ইতিমধ্যে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনেও ফিরে গেছেন অনেকেই।রাজ্য ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫১১। করোনার প্রথম ঢেউ থেকে এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮২৪ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ঠিকই, তবে করোনাকে জয় করে বিগত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ হাজার ২১১ জন। পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে বিগত দুই সপ্তাহ যাবৎ উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় থেকে অনেকটা বেশি।উত্তর ২৪পরগনা এবং কলকাতায় বিগত ২৪ ঘন্টায় মৃতের সংখ্যা ৩৫ এবং ৩০। তবে গতকালের থেকে কিছুটা কম।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের মধ্যে আক্রান্ত এবং মৃতের তালিকায় প্রথমের দিকে রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি,মালদা ও উত্তর দিনাজপুর জেলা। জলপাইগুড়ি জেলায় বিগত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০২ জন।জলপাইগুড়ি জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এবং জলপাইগুড়ি জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৫৬ জন। দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করণা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬২। দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮২ জন। ব্যতিক্রম আলিপুরদুয়ার জেলা। এই পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করণা আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১ জন। যা যথেষ্ট খুশির খবর। এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় সুস্থ হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় বাড়ি ফিরেছেন ১২৯ জন।কোচবিহার জেলায় আক্রান্ত ২৯৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৩২ জন।কালিংপং জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন। কালিম্পং জেলায় ১জনের মৃত্যু হয়েছে,তবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৫ জন। উত্তর দিনাজপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত ৩৪২ জন। উত্তরদিনাজপুর জেলাতে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৪৩ জন। দক্ষিণ দিনাজপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৭ জন।দক্ষিণ দিনাজপুরে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮০জন। মালদায় আক্রান্ত ৩৫২ জন। এবং মালদায় করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ৩৫৫ জন।
অপরদিকে শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় আক্রান্ত ২৪১ জন। মাটিগাড়া তে আক্রান্ত ৯৮ জন, নকশালবাড়িতে ৫৫ জন, ফাঁসিদেওয়া তে ৬ জন আক্রান্ত।সবমিলিয়ে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যাটা প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় জেলায়।
এই পরিস্থিতিতে সংক্রমনের চেন ব্রেক করে দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হারে লাগাম টানতে ১৫ দিনের জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। আজ রবিবার সকাল ছয়টা থেকে ৩০ শে মে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি থাকছে রাজ্যে। বিগত দিনগুলোতে আমরা দেখেছি সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে লাগামহীনভাবে বাড়ছে তাতে আংশিক লকডাউন করেও কিছুতেই যেন বাগে আনা যাচ্ছে না সংক্রমণকে।
অবশেষে এই ভয়াবহ অতিমারী থেকে রাজ্যবাসীকে বাঁচাতে লকডাউনের পথেই হাঁটতে হলো রাজ্য সরকারকে।অপর দিকে করোনা রুখতে মাস্ক অপরিহার্য।তাই রাজ্যবাসীকে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ এর তরফ থেকে আপনাদের কাছে অনুরোধ সবসময় মাক্স ব্যবহার করুন। স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলুন। আর অবশ্যই টিকা নিতে ভুলবেন না।