শিলিগুড়ি,১লা জুন,তনময় চক্রবর্তী: অভাবে ও অর্থনৈতিক সংকটে দিন কাটছে শ্রমিকদের।করোনার দ্বিতীয় প্রকোপের ভয়ে কাজে ডাকছে না কেউ। সকাল থেকে শিলিখুড়ি বাঘাযতীন পার্কের সামনে কাজের আশায় বসে থাকে ওরা। কাজ না পাওয়ায় অবশেষে মন ভার করে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়িতে। শিলিগুড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক মানুষ কাজের খোঁজে সাইকেলে ব্যাগ ঝুলিয়ে নানান রকম কাজের যন্ত্রপাতি ও টিফিন বক্সে একটু খাবার নিয়ে চালে আসে শিলিগুড়িরতে। ওরা শ্রমজীবী মানুষ। কাজের আশায় ওরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে বাঘাযতীন পার্ক এর সামনে।
কিন্তু করোনার দ্বিতীয় প্রকোপের ভয়ে কাজে ডাকছে না কেউ।সকাল থেকে দারিয়ে থাকলে দুই একজনের কাজ জুটলেও বাকিরা সবাই কাজের জন্য বসেই থাকে। দুই হাজার কুড়ি সালের মার্চ পর্যন্ত তারা রাজমিস্ত্রির সহযোগী ও কাঠমিস্ত্রির কাজ করে ঠিকঠাক জীবন যাপন করতেন।কিন্তু দুই হাজার কুড়ি সালের করোনা মহামারী আসার পর থেকেই ঝড় নেমেছে গোটা বিশ্বের সাথে দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও। মাঝখানে কিছুটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে আবারও সেই আগের পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে আমারা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে নারায়ণ বিধি-নিষেধ কার্যত লকডাউন।
অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ শপিংমল, সিনেমাহল, রেস্টুরেন্ট, বার, স্পা, বিউটি পার্লার। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যাতে কোনো অভাব দেখা না দেয় সেই কারণে বাজার খোলা থাকছে কেবল মাত্র সকাল 7 টা থেকে 10 টা পর্যন্ত। পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ রুখতে বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে পরিবহনেও। লোকাল ট্রেন, মেট্রো, বাস, লঞ্চ পরিষেবা স্তব্ধ।
এইরকম করাকরি পরিস্থিতিতে বিনা কারণে বাড়ির বাইরে বেরোলোই পড়তে হচ্ছে পুলিশের খপ্পরে। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। আর সেই কারনেই আপাতত যেভাবে রয়েছে সেভাবেই থাকতে চাচ্ছে মানুষ। বিনা কারণে আর বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছে না কেউ।
নতুন করে বাড়ি ঘর বানানো থেকে শুরু করে বাড়ির অন্যান্য আধুরা কাজ করাতেও চাইছেননা কেও । কারণ এই লকডাউন পরিস্থিতিতে আর্থিক সমস্যায় আছে অনেকেই। কেবলমাত্র দুবেলা দুমুঠো খাওয়া ছাড়া সৌখিনতা এখন আর কারো নেই।এমন পরিস্থিতিতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা সাইকেলে যন্ত্রপাতির ব্যাগ চাপিয়ে কাজ করার আশায় সকাল হতেই বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে ঠিকই । কিন্তু বাঘাযতীন পার্ক সামনে দুপুর পর্যন্ত বসে থেকে ওরা বাড়ি ফিরছে মুখ ভার করেই । দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষগুলো কাজ না পেলে তাদের সংসার চলবে কিভাবে? প্রতিদিনই দুবেলা-দুমুঠো খাবার তারা জোগাড় করতে হিমশিম? রাজ্য সরকার খাদ্যপণ্যের কিছু সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে বটে কিন্তু জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন অর্থের। কেবল মাত্র চালডাল পেলেইতো আর সংসার চলে না। বাড়ির নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য প্রয়োজন নগদ অর্থের। কিন্তু কর্মহীন এই মানুষগুলো কিভাবে বাঁচবেন তানিয়েই চিন্তায়।