শিলিগুড়ি,৫জুন, ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ ডেস্ক: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১১৩ জনের মৃত্যু হল পশ্চিমবঙ্গে। গোটা রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৯১৩ জন। আর গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গিয়েছেন ১৬ হাজার ৫৫৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের রিপোর্ট দেখে একটা বিষয় পরিষ্কার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে জেলায় জেলায়। আর সুস্থতার হারও অনেক বেশি। তবে এখনো মৃত্যুতে লাগাম আসেনি। অন্যান্য দিনের মতো রাজ্যে সর্বাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায়।
তবে এ বিগত ১৫ দিনের থেকে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কম। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং,মালদা জেলাতে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি গত ২৪ ঘন্টায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় বিগত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১৪৪ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। কিছুদিন আগেও শিলিগুড়ি শহরেই দৈনিক তিন শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হতেন। শিলিগুড়ি শহরের পাশাপাশি প্রতিটি জেলাতেই কমছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কমছে জেলায় জেলায় মৃত্যুর সংখ্যাও। কেবল মাত্র কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।
সরকারের নেওয়ার কার্যত লকডাউন এর সিদ্ধান্ত যে সফল হয়েছে তা এই করোনা আক্রান্তের সংখ্যার রাশেই পরিষ্কার। আর এই কারনেই রাজ্যে চলা বিধি নিষেধ যে অতি দ্রুত প্রত্যাহার হতে চলেছে সেটাও পরিষ্কার। প্রতিদিনই সুস্থতার হার বাড়ছে সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতাল নার্সিং হোম গুলিতে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আপরান প্রয়াসের ফল এই সুস্থতা। করোনার থাবা থেকে একেবারে মুক্ত না হতে পারলেও বিগত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিমবঙ্গে সুস্থতার হার বেশ ভালো।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৬হাজার ৫৫৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন। বেশ কিছু জেলাতে গত ২৪ ঘন্টায় কোন মৃত্যুর খবর নেই। চিকিৎসকেরা করোনা রোগীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাবার নির্দেশ দিয়েছেন তারা, করোণা মানেই মৃত্যু নয়, তা আশঙ্কাজনক এবং প্রবীণ করোনা রোগীদের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে বুঝিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে আগামী ১৫ ই জুন পর্যন্ত রাজ্যে নানান বিধিনিষেধ জারি থাকছে করোনার সংক্রমনে রাশ টানতে।বর্তমানে করোণা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে কমছে তাতে একটা বিষয় বলা যেতেই পারে, আগামী ১১দিনে অনেকটাই সংক্রমণে হ্রাস ঘটবে বাংলায়।
এবার জেনে নেওয়া যাক গত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় কতজন সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭২৬ জন। জলপাইগুড়ি জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে 5 জনের। দার্জিলিং জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭৭৯ জন।মৃত ৪। আলিপুরদুয়ার জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ২২২ জন। কোচবিহার জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৩৭৪ জন। কালিংপং জেলায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০৮ জন। উত্তর দিনাজপুর জেলায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২১৭ জন। তবে উত্তরদিনাজপুর জেলাতেও গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।দক্ষিণ দিনাজপুরে ১৯৫ জন। মালদায় ২১৪ জন গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।হাজারো এই সুস্থতার মাঝে আমরা হারালাম বিগত ২৪ ঘন্টায় ১১৩ জন রাজ্যবাসী কে। এবং রাজ্যে বিগত ২৪ ঘন্টায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৯১৩ জন।
শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৪ জন। মাটিগাড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ জন। ফাঁসিদেওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ জন । খড়িবাড়িতে বিগত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ জন। নকশালবাড়িতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ জন।
তবে রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই শিশু বলে জানা গিয়েছে। কিছুদিন আগেই বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন এবার করোনায় আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। তবে শিশুদের এই রোগের সাথে লড়াই এর শক্তি অনেকটাই বেশি, ফলে অতি দ্রুত শিশুরা সুস্থ হয়ে উঠবে বলে মত প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের কেবলমাত্র উত্তর ২৪ পরগনায় এবং কলকাতায় মৃতের সংখ্যা অধিক। উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের এবং কলকাতায় ২৩ জনের বাকি প্রতিটি জেলাতেই মৃত্যুসংখ্যা অনেকটাই কমেছে,
ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ এর তরফ থেকে আপদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ কোন রকম শারীরিক সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনরকম উপসর্গ দেখা দিলেই,পরীক্ষা করিয়ে নিন করোনার। অবহেলা একদম নয়। সম্ভব হলে দিয়ে নিতে হবে টিকা, বাড়ির বাইরে বেরোলে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে মাস্ক।আর শারীরিক দূরত্ব এবং স্যানিটাইজার বাঁচাবে সংক্রমণের হাত থেকে।