ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ,৩আগস্ট,মালদা: অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ। অভিযোগ জানাতে গেলে উল্টো একঘরে পরিবার। গ্রামেই সালিসি করে বিষয়টিকে মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও মাতব্বররা বলেই অভিযোগ। শালিসির নামে ওই যুবককে পালাতেও সাহায্য করা হয় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে ৫ মাসের অন্তস্বত্তা হয়ে পড়েছে ওই নাবালিকা। গ্রামের মধ্যে একঘরে, ঘরবন্দী তারা। নিয়মিত চলছে হুমকি, থানায় গিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্যে। তবুও গোপনে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হল নাবালিকার মা। ঘটনায় চাঞ্চল্য মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
গ্রামের স্থানীয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ঐ কিশোরী । মা ও বাবা দিনমজুর। গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২১ তারিখে যুবকের দিদি ঐ কিশোরীকে তাদের বাড়ি ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সেই যুবকের দিদি তাঁর দিদার বাড়ি যাবে বলে বেরিয়ে যায়। সেই সময় অন্য ঘরে ছিল অভিযুক্ত যুবক। সে এসে ওই নাবালিকাকে জোর করে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে চাকু দেখিয়ে ভয় দেখায় এবং ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
এরপর অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর থেকেই বিষয়টি কাউকে জানালে কিশোরীকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভয়ে কিশোরী পরিবার বা কাউকেই কিছু জানাননি। কিন্তু কিশোরী অন্তঃস্বত্তা হতেই সম্প্রতি পরিবার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে থানায় অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নিলে উলটে হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
গ্রামের কিছু প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও মাতব্বরের দল গ্রামেই শালিসি করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। শালিসিও বসে।কিন্তু অভিযুক্ত যুবককে উলটে আড়াল করা হয় বলে অভিযোগ । এরপরে নাবালিকার মা প্রতিবাদ করতে গেলে পাল্টা হুমকির মুখে পড়ে। শুধু তাই নয়, গ্রামের মধ্যে একরকম একঘরে করে রাখা হয় তাঁদের। নজর রাখা হয় তাঁরা থানায় অভিযোগ জানাতে যাচ্ছে কিনা।
অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর পরিবারের লোকজনের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। আর সেকারণেই তাঁকে আড়াল করতে চায় তাঁরা। বাড়িতে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ে কিশোরী ও তার পরিবার, গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় কিশোরী । এরপরেই বাধ্য হয়ে একরকম বেপরোয়া হয়ে গোপনে ছুটে যান থানায় নির্যাতিতার মা।
সেখানে গত রবিবার সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত যুবক ততক্ষণে গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গেছে। তবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও তৃণমূল সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।