শিলিগুড়ি,৪মে,বিউরো রিপোর্ট ফ্লাশ মিডিয়া নিউজঃ ১৯৯৯ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালির ব্লকবাস্টার হাম দিল দে চুকে সনম মনে আছে? সেই সময় বেশিরভাগ মানুষ ভেবেছিল যে অজয় দেবগন যে ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, এমন ভূমিকা বাস্তবের জীবনে দেখা যায় না, কারণ কোনও স্বামী তার স্ত্রীকে তার প্রেমিকের সঙ্গে চলে যেতে দিতে পারেন না।
তবে সেই ধারণাই ভেঙে ছবিটি প্রকাশের ২২ বছর পরে বিহারের ভাগলপুর জেলার সুলতানগঞ্জ শহরে সিনেমাটির বাস্তব জীবন সংস্করণ দেখা গেল।
সম্প্রতি যেখানে একজন ব্যক্তি তার সাত বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে স্ত্রীকে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিলেন। যে গল্পে কিছুটা হলেও হাম দিল দে চুকে সনম সিনেমারই ঝলক দেখা দিল।
বিহারের খাগরিয়া জেলার বাসিন্দা স্বপ্না কুমারী ২০১৪ সালে সুলতানগঞ্জের উত্তম মণ্ডলের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। সুখে-শান্তিতেই চলছিল ঘরসংসার। কিন্তু মনকে তো আর বেঁধে রাখা যায় না। ভালোবাসার কাছে কবে কোন যুক্তি কাজ করেছে!
একদিন স্বপ্নার সঙ্গে উত্তমের এক আত্মীয় ওই গ্রামেরই অল্প বয়সী রাজু কুমারের দেখা হয়। এরপর দু’জনে দু’জনের প্রেমে পড়েন। অন্যদিকে বিষয়টি কিছু দিনের মধ্যেই উত্তম জানতে পারেন। যদিও এত দিনের বিবাহিত স্ত্রীর সম্পর্কে এ কথা শোনার পর উত্তম হতবাক হন এবং মুষড়ে যান।প্রথম দিকে এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তিও হয় নিত্যদিন। উত্তমের বাড়ির লোকেরাও স্বপ্নাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। অবশ্য তাতে কোন কাজ হয়নি। অবশেষে সেই ভাঙনের যন্ত্রণা সামলে উঠে উত্তম মণ্ডল ঠিক করেন স্ত্রীকে তার প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন। মিথ্যা সম্পর্ক টিকিয়ে রেখে কোনও লাভ নেই বলে ভাবতে শুরু করেন তিনি।
যদিও আত্মীয়স্বজনরা তাদের বিয়ে বাঁচানোর জন্য তাকে অনেক বুঝিয়েছেন। কিন্তু উত্তম তার সিন্ধান্তে আগাগোড়াই অনড় থেকেছেন। উত্তম নিকটবর্তী দুর্গা মন্দিরে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে স্বপ্না এবং রাজুর বিয়ে দেন। তিনি তাদের দুই হাত তুলে আশীর্বাদও দেন তাদের সুখী জীবনের জন্য। তবে বিয়ের মুহূর্তে নিজেকে সামলাতে না পেরে অঝোরে কেঁদে ফেলেন উত্তম। তবুও সিদ্ধান্তে অবিচল থাকেন তিনি। কারণ ভালোবাসায় শুধু ত্যাগ আছে, আছে দহনের যন্ত্রণা। এখানেই তো ভালোবাসার স্বার্থকতা।