শিলিগুড়ি,১৮মে,দেবাশীষ দাস: মাছের বাজার খাঁ খাঁ করছে, নেই মাছের খদ্দের। কারন একটাই সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা ভিডিও। যে ভিডিওতে দেখা গেছে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে গঙ্গায় ভাসছে শয়ে শয়ে করোনা আক্রান্ত দের মৃতদেহ।আর সেই ভয়ে আতঙ্কে নদীয়ালি মাছ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে বাঙালি।
রায়গঞ্জ শহরের উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম মাছের আড়ত মোহনবাটি বাজারে তাই ব্যাপক মন্দা চলছে। মাছের বাজারে নেই ক্রেতা । কিভাবে দিন গুজরান হবে এই আশঙ্কাতেই এখন রায়গঞ্জ মোহনবাটি বাজারের মাছ ব্যাবসায়ীরা। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই জানালেন গঙ্গায় শবদেহ ভেসে আসার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া এবং টিভির পর্দায় দেখেই মানুষ আতঙ্কিত। ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্য ব্যাবসায়ীরা।
বেশ কিছুদিন ধরে টিভি খুললেই সংবাদের চ্যানেলগুলোতে দেখা যাচ্ছে শয়ে শয়ে করোনা আক্রান্ত মানুষের মৃতদেহ ভেসে চলেছে গঙ্গা নদীর বুক দিয়ে। নদীর উপর দিয়ে করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ ভেসে আসার ঘটনা প্রত্যক্ষ করতেই সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মৎস্য ব্যাবসায়ী থেকে মৎস্য প্রেমী বাঙালি।
কথায় আছে বাঙালি মাছ ছাড়া ভাত খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনা। সেই বাঙালি গঙ্গার উপর দিয়ে ভেসে আসা মরদেহের দৃশ্য দেখেই আতঙ্কে মাছ খাওয়াই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। মাছের ব্যবসা মন্দা থাকায় রায়গঞ্জ মোহনবাটি বাজারের বিশাল মাছের আড়তে নেই পাইকারি মৎস্য বিক্রেতাদের আনাগোনাও।ঠিক তেমনই ছবি দেখা গেল খুচরো মাছের বাজারেও। যেখানে মৎস্য প্রিয় বাঙালি মাছ কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে বাজারে,সেই বাজার একেবারেই খালি। ৭০ শতাংশ মাছ বিক্রেতাই তাঁদের দোকান বন্ধ রেখেছেন।
আড়তদারেরা জানালেন টিভিতে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ওই সমস্ত ভিডিও দেখার পর সাধারন মানুষ নদীয়ালি মাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফলে তাদের ব্যাবসা বন্ধ হওয়ার মুখে। তবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খুচরো মাছ ব্যাবসায়ীরা।যারা রোজ মাছ বিক্রি করেই দুপয়সা রোজগার করতেন। মাছ বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সংসার প্রতিপালন করতেই চরম সমস্যার সন্মুখীন হয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। মশলাপাতি দিয়ে রান্না করা মাছ থেকে কোন রকম রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও গেঁথে গেছে মানুষের মনে। কবে দূর হবে মানুষের এই দুশ্চিন্তা এখন সেদিকেই তাকিয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
আমরাও ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ এর তরফ থেকে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি সোশ্যাল মিডিয়ার যেকোন পোস্টকেই সঠিক ভেবে নেবেন না। কোন বিষয় নিয়ে মনে কোন প্রশ্ন থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। অযথা গুজব ছড়াবেন না এবং আতঙ্কিত হবেন না।