শিলিগুড়ি, ২৫এপ্রিল,প্রসেনজিৎ রাহাঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবার ভয়াবহ আকার নিয়েছে গোটা দেশে। আর এই ভয়াবহতার প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। ধীরে ধীরে বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল বাংলায় ১৫ হাজারের কাছাকাছি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। বাংলার প্রতিটি শহরেই নার্সিংহোমে বেড এর আকাল দেখা দিয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোর ও হাঁসফাঁস অবস্থা। দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের সংকট। ভারতকে অক্সিজেনের জন্য বিভিন্ন দেশের সাহায্য নিতে হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি তিনি বলেছেন করোনার হাত থেকে বাঁচতে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।সর্বশেষ পদক্ষেপ হল লকডাউন। বাংলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বাংলায় নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার জন্য বহিরাগতদের বাংলায় প্রবেশের কারণেই করোণা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন মমতা।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গের সবকটি স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সরকারি অফিসে অর্ধেক হাজিরা। প্রাইভেট অফিসগুলোকে work-from-home করার সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে রাজ্য সরকার। করোনা সতর্কতাঃ মেনে রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে চলার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ দিকে যাচ্ছে বুঝে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি শিলিগুড়ি শহরে ও রবিবার থেকে শুরু হলো পুলিশের কড়া নজরদারি। শারীরিক দূরত্বও না মানা এবং মাস্ক ব্যবহার না করলেই ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। শিলিগুড়ি শহরের হিলকার্ট রোড, মহাবীরস্থান, নয়াবাজার, খালপাড়া, সেবক রোড, বিধান রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় রবিবার দিনভর শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম দফায় দফায় হানা দেয়। মাস্ক না পড়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাজারগুলিতে যাতে ভীড় না হয় সেদিকেও নজর রাখছে পুলিশ, জামায়াত দেখলেই ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে এলাকা। শহরের প্রতিটি এলাকাতে ঘুরে ঘুরে মাইকিং করে মানুষকে করা হচ্ছে সচেতন। শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায় রবিবার ঘুরে বেড়ান শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক এবং শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার।
যেভাবে অন্যান্য জেলার মত দার্জিলিং জেলাতেও করোনার বৃদ্ধি ঘটেছে তার ফলেই মানুষকে এখন সচেতন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলেই জানিয়েছেন শিলিগুড়ি মহকুমা শাসক। পাশাপাশি চলবে আইনানুগ ব্যবস্থা বলেও জানান শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি এবং শিলিগুড়ি মহকুমা শাসক। শিলিগুড়ি শহরেও রাজ্যের অন্যান্য স্থানের মতো নার্সিংহোম গুলির মত বেডের আকাল দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দার্জিলিং জেলা তে ৫০০ জনেরও বেশি করোণায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ার ফলে এবার কড়া হাতে মানুষকে মাস্ক পড়াতে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে গোটা রাজ্য জুড়ে।