ফ্ল্যাশ মিডিয়া নিউজ ডেস্ক, ২৬ আগস্ট, কলকাতা: ভূমিষ্ঠ হল নুসরতের সন্তান। আপাতত মা এবং সন্তান দুজনেই ভালো আছে বলেই জানালো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নতুন অতিথি ও নুসরাতকে আগলে রাখতে হাসপাতালে যশ। বুধবার নুসরতের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নেপথ্যে নিঃশব্দে ঘটে গিয়েছিল বেশ কিছু রিয়েল লাইফ চিত্রনাট্য। যুক্ত হয়েছিল সাসপেন্স, উত্তেজনা,আরও কত কী… বৃহস্পতিবার মেঘলা দুপুরে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভূমিষ্ঠ হল নুসরতের সন্তান।
কলকাতার আকাশের আজ মনখারাপ। কিন্তু পার্কস্ট্রিটের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ৫১১ নম্বর কেবিনে আজ আনন্দে মাতোয়ারা নুসরাত এবং যশ। অবশেষে সে যে এল…। সে,অর্থাৎ নুসরত জাহানের পুত্র সন্তান। বৃহস্পতিবার দুপুরে মা হলেন নুসরত।পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন অভিনেত্রী। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। সন্তানের ওজন ২.৯ কেজি।
নতুন অতিথির আগমনে খুশি নুসরত, যশ-সহ নুসরতের কাছের মানুষেরাও। বুধবার রাতে যশের হাত ধরেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নুসরত, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায় যশ দাশগুপ্তকে। ওই বেসরকারি হাসপাতালে হাজির ছিলেন টলি ইন্ডাস্ট্রির হাই প্রোফাইলরাও। আর সেই কারণে হাসপাতালের
নিরাপত্তাও ছিল বেশ আঁটসাঁট।
গতকাল নুসরতের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নেপথ্যে নিঃশব্দে ঘটে গিয়েছিল বেশ কিছু রিয়েল লাইফ চিত্রনাট্য। যুক্ত হয়েছিল সাসপেন্স, উত্তেজনা আরও কত কী…নুসরত যে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন এ কথা আগে থেকেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু কখন, সে প্রশ্নই উঠে আসছিল বার বার।
বুধবার সন্ধে নামতেই নুসরতের নীল বাতির গাড়িতে নুসরতকে নিয়েই তাঁর বাড়ি ছাড়তে দেখা গেছে যশকে। যশই চালাচ্ছিলেন গাড়িটি। বেশ কিছুক্ষণ নিজেরা সময় কাটিয়ে নুসরতকে নিয়ে যশ চলে যান তাঁর বাড়িতে। সেখানে যশের মা থাকেন। শুভকাজে যাওয়ার আগে একবার মায়ের সাথে সাক্ষাৎ?রাত গভীর হতেই যশকে সঙ্গী করে নুসরতের গাড়ি ছুটল শহরের একটি নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালের দিকে।
হাসপাতালে পৌঁছতেই নুসরতের গাড়ি ঘিরে ধরেন ফোটোশিকারিরা,অপেক্ষা করেন তাঁর একঝলক ফ্রেমবন্দী করার, ঠিক তখনই অদ্ভুত এক কাণ্ড… নুসরতের কালো কাচের গাড়ি থেকে নামলেন না নুসরত, নামলেন না যশও। নিজেদের আড়াল করতেই হাসপাতালের ব্যাক ডোর দিয়ে অন্য এক গাড়ি করে হাসপাতালে প্রবেশ করলেন নুসরাত যশ।
কেন এত লুকোছাপা? কেন এত আড়াল… বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে নুসরত ও তাঁর মাতৃত্ব নিয়ে যেন ঝড় বয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিনেত্রীকে নিয়ে কুৎসিত মন্তব্য থেকে শুরু করে, সন্তানের পিতৃপরিচয়… ট্রোলিং যেন থেমেও থামছিল না। ট্রোলিংকে সঙ্গে করেই এ দিন পৃথিবীকে প্রথম বার চেনার সুযোগ পেল নুসরতের ওই একরত্তি।পিতৃ পরিচয়? নুসরতের সন্তান– এই পরিচয়েই শিরোনাম দখন করল সেই ক্ষুদে। এ এক অন্য চ্যালেঞ্জ।
কার্যত নেটিজেনদের কে চ্যালেঞ্জ করেই নিজের মনোবল বাড়িয়ে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখালো বাংলার এই মেয়ে।নুসরতের মা হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই নুসরাতের সাথে বিয়ে হওয়া নিখিল জৈন জানিয়ে দিয়েছিলেন ঐ সন্তানের বাবা তিনি নন। আপর দিকে, নুসরত জানিয়েছিলেন নিখিলের সঙ্গে তুরস্কতে যে ‘বিয়ে’ হয়েছিল তা ভারতে ‘বৈধ’ নয়, কারণ আইনত তাঁদের বিয়ে হয়নি। তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন।
এর পরই প্রশ্ন ওঠে, জন-প্রতিনিধি হিসেবে লোকসভার বায়োপ্রোফাইলে তাহলে ‘বিবাহিত’ এবং স্বামীর নামের জায়গায় নিখিল জৈনের উল্লেখ করলেন কেন নুসরত? সংসদ ভবনে ‘আমি নুসরত জাহান রুহি জৈন’ বলে সাংসদ হিসাবে নুসরত জাহানের শপথবাক্য পাঠের যে মুহূর্তের ভিডিয়ো টুইটে শেয়ার করেছেন বিজেপির অমিত মালব্য, তাতে আরও জোরদার হয়েছিল এই প্রশ্ন। অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে নুসরতের বিশেষ সম্পর্কের কারণেই নাকি নিখিলের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যে ভাঙন ধরে, এই জল্পনাও বিভিন্ন মহলে তৈরি হয় নুসরাত গর্ভবতী হওয়ার পর। গোটা সময়টা কার্যত চুপই ছিলেন ওঁরা। তবে বিগত বেশ কিছু দিন ধরে যশ ও নুসরাতের খুল্লামখুল্লা ডেটের ছবি যেন বুঝিয়ে দিচ্ছিল অনেক কিছু। আগামী দিনে নুসরতের সন্তান কোন পরিচয়ে বেড়ে উঠবে সে হিসেব আজ তোলা থাক। সবে এসেছে সে, দুনিয়া চেনার এখনও ঢের দেরী।
তবে বাংলার এই মেয়ে যা করে দেখালো তা অসহায় দরিদ্র পরিবারের কোন মেয়ের পক্ষে করা সম্ভব হবে কিনা জানা নেই। কারণ বাংলায় পিতৃত্বের পরিচয়ের অভাবে অনেক শিশুই আর পৃথিবীর মুখ দেখার সুযোগ পায় না। সমাজ কি বলছে নেটিজেনরা কি বলছে সেদিকে না তাকিয়ে হাজারো বিতরকের মাঝেও নুসরাত একটা বিষয় পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিল মেঘলা দিনে ভূমিষ্ঠ হওয়া পুত্র সন্তান ভালোবাসারই স্মৃতি। আর যশ সবসময় নুসরাতের পাশে থেকে এটাও বুঝিয়ে দিল ভালোবাসার সংজ্ঞা।