প্রসেনজিৎ রাহা, ১০ সেপ্টেম্বর, চন্দননগর: গভীর রাতে নীলবাতি ও নীল ফ্ল্যাশার লাগানো গাড়িতে দুইজন সঙ্গীকে নিয়ে মদ্যপান করছেন এক পুলিশ অফিসার! তাও আবার ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রাত্রিবেলায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে গাড়িতে বসে এই কান্ড করতে পারেন কি?
কাছে যেতেই ভুল ভাঙল।ধরা পড়ল ভুয়ো পুলিশ অফিসার, তাও আবার ডিএসপি পদমর্যাদার। এবার চন্দননগরে, ধৃতের নাম সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। বাড়ি চন্দননগর বক্সি গলিতে।ঘড়িতে রাত ১১ টা ১৫ চন্দননগর স্ট্যান্ড রোডে রানীঘাটের কাছে একটি সাদা স্করপিও গাড়ি কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশ।গাড়িটির নম্বর WB 19J 7988 গাড়িটিতে নীলবাতি, ফ্লাশার ও হুটার লাগানো ছিল।সামনে গভঃ অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টিকার লাগানো। এইসব দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের।
রানী ঘাট থাকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চন্দননগর থানা।পুলিশ গিয়ে গাড়িটিকে থাকা ব্যক্তিদের এতো রাতে ওখানে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে।গাড়ির মধ্যে পুলিশের পোশাক পড়া একজনকে বসে থাকতে দেখে পুলিশ। টহলরত নিচু তলার ওই পুলিশকর্মীরা গাড়িতে বসে থাকা তিন তারার ঐ অফিসার কে দেখে কার্যত চমকে যান।
তবুও কর্তব্যে অনড় পুলিশকর্মীরা ঐ ব্যক্তির কাছে তার পরিচয় জানতে চায়। সেই সময়ে ওই পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি নিজেকে ডিএসপি পরিচয় দেয়।সোল্ডারে তিনটে তারা, পরনে পুলিশের পোষাক, বুকে নেমপ্লেট, হাতে ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ সার্ভিস এর স্টিকার, হুবুহু পুলিশ অফিসার।দেখে বোঝার উপায় নেই। কিন্তু ওই ব্যক্তির সাথে
কথা বলতেই মুখে মদের গন্ধ পেয়ে সন্দেহ বাড়ে টহলরত পুলিশ কর্মীদের। তাদের মনে প্রশ্ন আসে একজন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার এত রাতে স্ট্যান্ডে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মদ্যপান করবেন? তাও আবারর সঙ্গে দুজন বন্ধু! এরপর বিষয়টি নিয়ে টহলরত পুলিশ কর্মীদের সন্দেহ হওয়াতে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়,থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য।
চন্দনগর পুলিশ জানিয়েছে, চন্দননগর বক্সি গলির বাসিন্দা বছর ত্রিশের সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী আগে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ এর কাজ করত।এক সময় গাড়িও চালিয়েছে।সেই সুবাদে জেলা প্রশাসনের গাড়ি চালায় এমন কয়েকজনের সঙ্গে আলাপও রয়েছে।বর্তমানে কিছুই করেন না সে।ডিএসপি সেজে ঘুরে বেড়ায়। এক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার হয়ে ঘুরে বেড়ানো টাই কাল হলো।
জানা গিয়েছে একটি নামজাদা স্কুলের শিক্ষকতাও করেছে এই যুবক।চন্দননগর পুলিশ তার বিরুদ্ধে সুয়ো মোটো মামলা রুজু করেছে।ভুয়ো ভ্যাকসিন কান্ডে দেবাঞ্জন দেব গ্রেফতার হবার পর থেকেই একের পর এক ভুয়ো সিবিআই অফিসার,ভুয়ো আইনজীবী,ভুয়ো মানবাধিকার কর্মি গ্রেফতার হয়।
এবার হুগলিতে ধরা পড়ল ভুয়ো পুলিশ অফিসার। অভিযুক্তর সাথে আর কে কে জড়িয়ে রয়েছে তার তদন্ত শুরু করেছে চন্দননগর থানার পুলিশ। পাশাপাশি এই যুবক কেন পুলিশ সেজে ঘুরে বেড়াতো তার ও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।