শিলিগুড়ি,১৪জুন,প্রসেনজিৎ রাহা: পরকীয়া করার অভিযোগ এনে এক মহিলাকে নগ্ন করে সারা গ্রাম ঘোরানো হলো। আদিবাসী ঐ মহিলাকে পরকীয়া করার অপরাধে গ্রামের সালিসি সভায় মোড়লদের উপস্থিতিতে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঝড়,বৃষ্টির রাতে তাকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানোর অভিযোগ উঠলো।
পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে আদিবাসী মহিলার সেই নগ্ন ছবি। মহিলাকে বলপূর্বক গ্রামে ঘোরানোর করুন ছবিও এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।রবিবার সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই চমকে উঠেছেন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ।আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকে ধিক্কার জনক এই ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতে ঘটলেও রবিবার রাতে তা প্রকাশ্যে আসে।মধ্যেযুগীয় বর্বরতার এই ঘটনাটি ঘটেছে কুমারগ্রাম ব্লকের আদিবাসী প্রত্যন্ত একটি গ্রামে।ঘটনার খবর পেয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ঐ মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে কুমারগ্রাম থানার পুলিশ।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে গত ছয়মাস আগে পরকীয়ার জেরে পরপুরুষের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন আদিবাসী ঐ গৃহবধু।তবে সেই ব্যক্তির সাথে ওই মহিলার সম্পর্ক খারাপ হবার কারনে সে ফিরে আসে নিজের স্বামীর কাছে।মানবিকতার খাতিরে তার স্বামীও তাকে গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু
এরপরেই ঐ দম্পতি গ্রামের মাতব্বরদের রোষানলে পরেন।গ্রামের মোড়লদের নির্দেশে ওই মহিলার ও তার স্বামীর উপর শুরু হয় মানসিক এবং শারিরীক নির্যাতন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আদিবাসী ওই দম্পতিকে শালিসি সভায় হাজির থাকার নির্দেশ দেন গ্রামের মোড়লরা। এরপর ওই নির্যাতিত মহিলার ও তার স্বামী বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের শালিসি সভায় আসেন। এবং ওই শালিসি সভায় গ্রামের মাতব্বররা নিদান দেয় পরকীয়ায় লিপ্ত ওই আদিবাসী মহিলাকে গ্রামে উলঙ্গ করে ঘোরাতে।
এবং ওই মহিলার স্বামীকে সমাজচ্যুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
শালিসি সভার নিদানে বৃহস্পতিবার বৃষ্টির রাতেই প্রথমে ওই মহিলাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর একে একে আদিবাসী ওই মহিলার দেহ থেকে সমস্ত জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে সালিসি সভায় উপস্থিত গ্রামের স্থানীয় যুবক ও মাতব্বররা।এরপর অন্ধকার রাতেই শুরু হয় আদিবাসী সমাজের কিছু মাতব্বরদের পৈশাচিক কান্ড কারখানা। সেই মুহুর্তের কিছু ভিডিও তুলে রাখেন স্থানীয় কিছু যুবক। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ সেই নারকীয় ঘটনার ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হতেই স্তম্ভিত জেলার মানুষজন। আলিপুরদুয়ার
জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে জানিয়েছেন দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।অপরাধীদের চিহ্নিত করতে অভিযান শুরু করা হয়েছে। তবে সূত্রের খবর পুলিশের তদন্ত শুরু হতেই ফেরার গ্রামের মাতব্বর অভিযুক্তরা।